রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১
এইচ,এম হুমায়ুন কবির, কলাপাড়া (পটুয়াখালী)।।
অনন্য প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের আধার পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটা। এখানে রয়েছে একই স্থান থেকে সুর্যোদয় ও সুর্যাস্ত দেখার দুর্লভ সুযোগ। সুর্যোদয় ও সুর্যাস্তোর বিরল দৃশ্য অবলোকন করা যায় কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত থেকে। এখন বেলাভুমি জুড়ে নয়নাভিরাম সবুজ সাগরলতা আর সাদা ঝিনুকের ছড়াছড়ি।বাঁধাহীন বিচরনেলাল কাঁকড়ার দল সৈকতের বালিয়াড়িতে তৈরি করছে দৃস্টিনন্দন সব আল্পনা। জন্মেছে নতুন নতুন ঝাউ গাছ। সৈকতের অগভীর জলের্নিবিঘ্নে মাছ শিকারে ব্যস্ত গাঙচিলের দল। মাঝে মধ্যেই উপক’লের কাছাকাছি দেখা মিলছে ডলফিনের।
সাগরে মাছ শিকার বন্ধ থাকায় সৈতক সংলগ্ন লেক এবং খালেও মিলছে মাছের প্রাচুর্যতা। গঙ্গামতি সৈকতের বালুকাবেলায় ছোট ছোট লাল কাঁকড়ার পর্যটকদের জন্য বাড়তি পাওনা। দুর থেকে দেখলে মনে হবে পর্যটকদের অভ্যর্থনার জন্য যেন সৈকতজুড়ে লালগালিচা বিছিয়ে রাখা হয়েছে। তাইতো দেশ বিদেশের পর্যটকেরা বার বার ছুটে আসে গঙ্গমতি সৈকতে। প্রকৃতি ও সমদ্রের অপরপ মিতালী চোখে পড়ে গঙ্গামতি সৈকতে। যেখানে কৃত্রিমতার চাপ নেই। খুব সকালে গঙ্গামতি সৈকতে দাঁড়িয়ে সমুদ্রের বুক চিরে সুর্যোদয় দেখার স্বপ্নিল অনুভুতি এন দেয় এক স্বগীয় আবেশ। সুর্য লাল আলো ছড়িয়ে দেয় গঙ্গামতি বেলাভুমিতে।
সৈকতজুড়ে লাল কাঁকড়ার ছোটাছুটি উচ্ছল করে তোলে অন্তর। ক্ষুদ্র কাঁকড়ার আঁকা নিখুঁত আলপনা দর্শনার্থীও নিয়ে যায় পল্লীকবি জসীম উদ্দীনের নকশিকাঁথার মাঠে। তৃতীয় দফার টানা লকডাউনে যানবাহনসহ পর্যটক এবং জেলেদেও অনিয়ন্ত্রিত বিচরন না থাকায় এমন দৃশ্য এখন সূর্যোদয় আর সূর্যাস্তের বেলাভু’মি পর্যটন নগরী কুয়াকাটার দীর্ঘ ১৮কিলোমিটার সৈকতের। যেন হঠাৎ করেই কুয়াকাটা সৈকতের প্রাকৃতিক জীব-বৈচিত্রসহ প্রানীক’লখুঁজে পেয়েছে নিজস্ব । প্রায় দুই দশক পর সৈকতের এমন নয়নাভিরাম রূপ মুগ্ধ করেছে স্থানীয়সহ পর্যটন ব্যবসায়ীদের। স্থানীয়সহ পর্যটন ব্যবসায়ীরা জানান, সৈকত প্রায়শই ভেসে আসে মরা ডলফিন, কচ্ছপ, তিমি মাছ।
গভীর সমুদ্রগামী জেলেদের জালে এসব প্রানী আহত হয়ে মৃতাবস্থায় ভেসে আসছে সাগর তীরে। মানুষেরঅবাধ বিচরণ আর উত্যক্তের কারনে সী-বিচে গত দুই দশক ধরে দেখা নেই গাঙচিলের। সৈকত সংলগ্ন ইকোপার্ক, ঝাউবাগান, লেম্বুর চর, গংঙ্গামতির সংরক্ষিতবনাঞ্চল থেকে দিনদিন হারিয়ে যাচ্ছে বন্য শুকুর, কাঠ বিড়ালী, শিয়ালসহনানা প্রজাতির পাখি। মোটর সাইকেলের অবাধ বিচরনে পিস্ট হয়ে মারাপড়ছে লাল কাঁকড়াসহ বিভিন্ন প্রজাতির কাঁকড়া। এদের অবাধ বিচরনওহচ্ছে বাঁধাগ্রস্ত। বাধ্য হচ্ছে এরা আবাসস্থল পরিবর্তনের।
ট্যুরিজম ব্যবসায়ী আবুল হোসেন রাজু, অন্ধারমানিক ট্যুরিজমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বাচ্চু বলেন, পর্যটকসহ জেলেদের মাঝে সচেতনতা তৈরি করে প্রায় দুই দশক পরে ফিরে আসা সৈকতের প্রাকৃতিকে সংরক্ষন করা গেলে আদাল বৈশিষ্ঠ্য পাবে কুয়াকাটার পর্যটনশিল্প।
কুয়াকাটা ট্যুরস অপারেটর এসোশিয়েসনের (টোয়াক) প্রেসিডেন্টরম্যান ইমতিয়াজ তুষার বলেন, সৈকতের প্রানীকুলসহ প্রকৃতিকে রক্ষায় জনসচেতনতা ছাড়াও সংশ্লিস্ট কর্তৃপক্ষকে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে। পটুয়াখালী ইকোফিস প্রকল্পের জীব-বৈচিত্র্য গবেষক সাগরিকা স্মৃতি বলেন, স্বরূপে ফিরে আসা কুয়াকাটা সৈকতের জীব বৈচিত্রসহ প্রানীকূলের স্বাভাবিক আচরন, বিচরন রক্ষায় সবাইকে সচেতন হতে হবে। প্রকতিকে তার মত করে বেড়ে উঠতে দেয়াসহ এর সংরক্ষন করা হবে।
পটুয়াখালীর বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বলেন, ঝাউগাছসহ লাল কাঁকড়ার অভায়াশ্রম সংরক্ষনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।